তামাকপণ্যে ৯০ শতাংশ সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী এখন সময়ের দাবি
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাক মুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন অন্যতম একটি কায়কর পন্থা। আর এই ধারা বাস্তবায়নে তামাকপণ্যেও মোড়কের ৯০ শতাংশ এলাকা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর কোন বিকল্প নেই। গত ১১ এপ্রিল ২০১৯ ইং বৃহস্পতিবার টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্স সেল (টিসিআরসি), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি উদ্যোগে ঢাকার বিএমএ ভবনের শহীদ ডাঃ শামসুল আলম খান (মিলন) সভাকক্ষে “তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের ৯০ শতাংশ এলাকা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রন সেলের সমন্বয়কারী ও যুগ্ম সচিব জনাব খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভার প্রধান অতিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রন সেলের প্রাক্তন সমন্বয়কারী ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অবঃ) এবং টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি (এনসিডি) জনাব মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস।
উক্ত আলোচনা সভায় “তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের ৯০ শতাংশ এলাকা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিসিআরসির প্রকল্প কর্মকর্তা ও গবেষণা সহকারী ফারহানা জামান লিজা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এফসিটিসি স্বাক্ষরকারী ১ম দেশ হওয়া সত্তে¡ও মোড়কের মাত্র ৫০ শতাংশ সচিত্র সতর্কবানী প্রদান করা হয়। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ও ভারত সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদানে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে গেছে। সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী তামাক ব্যবহারকারীদের সতর্ক করার ক্ষেত্রে এবং মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতে দ্রæত কাজ করবে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই বড় আকারের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর দিকে যাচ্ছে। সে তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, যে দেশে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী যত বড়, সে দেশ তামাক নিয়ন্ত্রণে তত দ্রæত এগিয়ে গেছে। এছাড়া কোম্পানিগুলো সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণের ঠিক আগে থেকেই ছবি উপরে বা নিচে দেওয়া নিয়ে যেসকল অপকৌশল অবলম্বন করে আসছে, ৯০% সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী তার স্থায়ী সমাধান হতে পারে। এসব দিক বিবেচনা করলে বোঝা যায়, মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর পরিধি ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করা আবশ্যক হয়ে উঠেছে।
টিসিআরসির সদস্য সচিব ও ডিআইইউ-এর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ বজলুর রহমানের উপস্থাপনায় উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এইড ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি অনিক, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাষ্টের প্রতিনিধি মাসুম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি আবরার, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রতিনিধি ইমন, নাটাবের প্রতিনিধি খলিল উল্লাহ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রকল্প কর্মকর্তা জনাব নবীন একরাম এবং তরুণ প্রতিনিধিদের পক্ষে ডিআইইউ-এর বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
উল্লেখ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনকে পাশে নিয়ে টিসিআরসি দীর্ঘদিন ধরে তামাকপণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর পরিধি বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করার দাবী জানিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যার মধ্যে পথসভা, ডেমোনেস্ট্রেশন, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, আলোচনা সভা, সেমিনার ছাড়াও প্রায় ৪০ জন এমপির সাথে এ বিষয়ে সাক্ষাৎ করা, ২৫ জন সংসদ সদস্যের কাছ থেকে ডিও সংগ্রহ করা, দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে লিফলেট ক্যাম্পেইন করা, সিগনেচার ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে প্রায় ২০০০ হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সাক্ষর সংগ্রহ করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের সাথে সাক্ষাৎ এবং গত ১৩ মার্চ আমরা মাননীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি নিয়ে দ্রæত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আলোচনা করে টিসিআরসি। এর আগে টিসিআরসি জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি ফাইল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তুলে।