তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে কর আরোপ করার দাবীতে

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন ও এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষে তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে কর আরোপ করার দাবীতে- অবস্থান কর্মসূচি”

আজ ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ইং, মঙ্গলবার সকাল ৯:৩০ টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এর সম্মূখ্যে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও এইড ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট সরকারী ও বেসরকারী স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন ও এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষে তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে কর আরোপ করার দাবীতে- অবস্থান কর্মসূচি” এর আয়োজন করা হয়। 
উক্ত অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন; ২০১৬ সালে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন’ শীর্ষক সাউথ এশিয়ান স্পিকার’স সামিট এর সমাপনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তামাকের উপর বর্তমান শুল্ক-কাঠামো সহজ করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে এখাতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি তামাকপণ্যের ব্যবহার হ্রাস পায়। অধিকন্তু, দেশের ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতেও ঝউএ এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লক্ষ্য- ৩ অর্জনে আন্তর্জাতিক চুক্তি ঋৎধসবড়িৎশ ঈড়হাবহঃরড়হ ড়হ ঞড়নধপপড় ঈড়হঃৎড়ষ (ঋঈঞঈ) বাস্তবায়ন ও তামাকজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগ ও অকাল মৃত্যুর কারণে প্রতিবছর ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় (২০১৭-১৮ অর্থবছরে জিডিপি এর ১.৪ শতাংশ)  তামাকের কারণে সৃষ্ট এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ। 
বাংলাদেশে তামাকের শুল্ক-কাঠামো অত্যন্ত জটিল যেমন: সিগারেটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন মূল্যস্তর, গুল-জর্দার ক্ষেত্রে এক্স-ফ্যাক্টরি প্রাইস ইত্যাদি প্রথা চালু রয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি একটি অন্যতম পন্থা। মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতিকে বিবেচনা করে তামাক পণ্যকে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে হারে তামাক কর আরোপ করা প্রয়োজন এ জটিল কাঠামোর কারণে তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের তথ্য বলছে, পৃথিবীর যেসব দেশে তামাকপণ্যের দাম অত্যন্ত সস্তা বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। ফলে সামগ্রিকভাবে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনস্বাস্থ্য, পক্ষান্তরে লাভবান হচ্ছে তামাক কোম্পানি। 
এমতাবস্থায়, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর তামাকের নেতিবাচক প্রভাবের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা-“২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়নে অবিলম্বে একটি সহজ ও কার্যকর তামাক শুল্কনীতি প্রণয়নের প্রস্তাব করছি। সেই সাথে প্রস্তাব রাখছি, মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কার্যকর শুল্কারোপের মাধ্যমে প্রতিবছর তামাক পণ্যের প্রকৃত মূল্য বৃদ্ধি ও উচ্চ হারে করারোপ করা। 
এছাড়া আগামী বাজেট ২০১৯-২০ এর জন্য আমার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ হচ্ছে: সিগারেটের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৪টি মূল্যস্তর (নি¤œ-দেশীয়, নি¤œ-আন্তর্জাতিক, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) বিলুপ্ত করে ২টি মূল্যস্তর (নি¤œ ও উচ্চ) নির্ধারণ এবং গুল-জর্দার ক্ষেত্রে এক্স-ফ্যাক্টরি প্রথা প্রভৃতি বাতিল করে সকল তামাকপণ্যের প্যাকেট/কৌটা প্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ স্পেসিফিক এক্সাইজ ট্যাক্স আরোপ করা হোক যাতে ক্ষতিকর এসব পণ্যের প্রকৃতমূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি তামাক উৎপাদনে ব্যবহৃত ভূমির উপর পৃথক করে ভূমি কর আরোপ করার দাবী জানানো হয়।

error

Enjoy this blog? Please spread the word :)